কিভাবে একজন প্রফেশনাল মোবাইল এ্যাপ ডেভলপার হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করবেন – Part 1 (প্লাটফর্ম বাছাই)

become-a-professional-app-developer

(যারা বিগিনার ও শেখার ব্যাপারে সিরিয়াস তাদের ফোকাস করা হয়েছে)

শুরুতেই কাগজ কলম নিন, কাগজের উপরের দিকে একটু বড় করে আপনার নাম লিখুন। নামের নিচে ছোট করে লিখুন “Mobile App Developer”। একদমই হাসির কিছু হয় নাই, সেলফ ব্রেন্ডিংয়ের শুরু এখান থেকে এবং এটা আপনাকে মোটিভেশন দিবে। আপনার রেজিওমি/সিভি লেখা শুরু হলো এর মাধ্যমে। এখন নিচের ধাপগুলো অনুসরন করুন।

প্রথমেই চিন্তা করুন কোন প্লাটফর্ম নিয়ে কাজ করবেন। 

৩ টি প্লাটফর্ম রয়েছে:

  • ন্যাটিভ এন্ড্রয়েড – কটলিন/জাভা ল্যাঙ্গুয়েজ – গুগলের তৈরি প্লাটফর্ম – জেট-ব্রেইনসের কটলিন ল্যাঙ্গুয়েজ
  • ন্যাটিভ আইওএস – সুইফট/অবজেক্টিভ সি ল্যাঙ্গুয়েজ – এ্যাপলের তৈরি প্লাটফর্ম ও ল্যাঙ্গুয়েজ
  • ক্রস প্লাটফর্ম
    • ফ্লাটার – ডার্ট ল্যাঙ্গুয়েজ – গুগলের তৈরি প্লাটফর্ম ও ল্যাঙ্গুয়েজ
    • রিয়েক্ট ন্যাটিভ – জাভাস্ক্রিপ্ট (জাভা নয়) ল্যাঙ্গুয়েজ – মেটা/ফেসবুকের তৈরি প্লাটফর্ম
    • জামারিন, আয়োনিক, ফোন গ্যাপ etc. – যেহেতু প্রফেশনাল হতে চান তাই এগুলোর অস্তিত্ব নাই ধরে নেন।

Native Android –

ন্যাটিভ এন্ড্রয়েড হলো এন্ড্রয়েড এ্যাপের প্রান, গুগল সরাসরি এটাকেই প্রাধান্য দেয়। ক্রসপ্লাটফর্ম গুলোও ভিতরে ভিতরে এটার উপর নির্ভর করে। এর জন্য আপনাকে শিখতে হবে কটলিন ও কিছুটা জাভা। কটলিন ও জাভা ভাই ভাই – কারন দুইটাই JVM এর উপর রান করে, দুইটাই এক প্রজেক্টে একসাথে ব্যবহার করা যায়। যদি আগে শেখা না থাকে তবে জাভা এখন আলাদা করে শেখার দরকার নাই। কটলিন অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড শিখলে জাভার কোড দেখে বুঝতে পারবেন কি লেখা হয়েছে। জাভার কোড এন্ড্রয়েড স্টুডিও কটলিনে কনভার্ট করতে পারে, তাই শুধু কটলিন ফোকাস করে শিখলেই হবে। তবে জাভাকে ঘৃনার চোখে দেখা যাবে না এটা কটলিনের আশে পাশে ঘুরঘুর করবে মাঝে মাঝে জাভার কাজ লাগবে তবে সেটা খুব বেশি না। ক্রস প্লাটফর্ম আসবে-যাবে কিন্তু ন্যাটিভ প্লাটফর্ম রয়ে যাবে, তাই এটি বেশ স্ট্যাবল প্লাটফর্ম।

যা যা লাগবে: কমপক্ষে ৮ গিগাবাইট র‌্যাম আছে এমন ওইন্ডোজ/লিনাক্স/ম্যাক যে কোন একটি অপারেটিং সিস্টেম চালিত কম্পিউটার/ল্যাপটপ আর এন্ড্রয়েড মোবাইল থাকলে ভালো।

ডেভলপমেন্ট করার সফটওয়্যার: এন্ড্রয়েড স্টুডিও (Android Studio)

চাকুরি: দেশে-বিদেশে এই প্লাটফর্মের ডেভলপারদের বেশ ভালো চাহিদা রয়েছে।

যদি এই প্লাটফর্ম পছন্দ করেন তবে আপনার নামের নিচে যে “Mobile App Developer” লিখেছিলেন সেটা কেটে দিন আর লিখুন “Android App Developer – Kotlin”।

Native iOS –

ন্যাটিভ আইওএস হলো সুইফট অথবা অবজেক্টিভ সি দিয়ে এ্যাপ ডেভলপমেন্ট করা। এ্যাপল অন্য কোন ক্রস প্লাটফর্মকে সাপোর্ট দেয় না বরং ক্রস প্লাটফর্মগুলো এ্যাপলের নিয়ম অনুসারে নিজেকে বদল করে। এই প্লাটফর্মে সুইফট ও অবজেক্টিভ সি ভাই ভাই কারন দুইটাই একই প্রজেক্ট ব্যবহার করা যায় ও এক ল্যাঙুয়েজের কোড অন্যটাতে কল করা যায়। এখানে মূলত শিখতে হবে সুইফট, খুব বিশেষ প্রয়োজন না হলে অবজেক্টিভ সি তে কাজ করতে হয় না। তাই শেখার ফোকাস শুধু সুইফট ল্যাঙ্গুয়েজেই রাখতে হবে। এটাও একটি স্ট্যাবল প্লাটফর্ম দীর্ঘদিন ধরে ডেভলপ হয়ে আসছে।

যা যা লাগবে: কমপক্ষে ৮ গিগাবাইট র‌্যাম আছে এমন ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম চালিত MacBook/iMac/MacMini আর iPhone থাকলে ভালো কারন কয়েকটি বিষয় এখনো সিমুলেটরে কাজ করে না তবে সেগুলো বিগিনারদের জন্য চিন্তার বিষয় না।

ডেভলপমেন্ট করার সফটওয়্যার: এক্সকোড (Xcode)

চাকুরি: দেশে-বিদেশে এই প্লাটফর্মের ডেভলপারদের বেশ ভালো চাহিদা রয়েছে তবে দেশে চাকুরির পরিমান এন্ড্রয়েড ডেভলপারদের তুলনায় কম কিন্তু স্যালারি কিছুটা বেশি হতে দেখা গেছে অথবা এন্ড্রয়েড ডেভলপারদের সমানও হতে পারে। এক্ষেত্রে শেখার জন্য ম্যাক কম্পিউটার প্রয়োজন হয় বলে কম সংখ্যক ডেভলপার তৈরি হয় আর তাই চাকুরির বাজারে প্রতিযোগীতা কম। 

যদি এই প্লাটফর্ম পছন্দ করেন তবে আপনার নামের নিচে যে “Mobile App Developer” লিখেছিলেন সেটা কেটে দিন আর লিখুন “iOS App Developer – Swift”।

Flutter –

ফ্লাটার হলো বর্তমানে ক্রস-প্লাফর্মের মধ্যে ট্রেন্ডিংয়ে থাকা প্লাটফর্ম। এটিকে গুগল সাপোর্ট দেয় বলে খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করে নিয়েছে। এটি নিয়ে কাজ করতে হলে, ডার্ট ল্যাঙ্গুয়েজ শিখতে হবে। ক্রস-প্লাটফর্ম হওয়ায় এটি দিয়ে এন্ড্রয়েড, আইওএস ও ওয়েব এ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা যায় একটি কোড বেসের মাধ্যমে। এটি ন্যাটিভ প্লাটফর্মগুলোর প্রজেক্ট ক্রিয়েট করে তার উপর কমন কিছু কোড প্রয়োগ করে যা সব প্লাটফর্মে রান করতে পারে। এটা ক্রস-প্লাটফর্মগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়।

যা যা লাগবে: কমপক্ষে ৮ গিগাবাইট র‌্যাম আছে এমন ওইন্ডোজ/লিনাক্স/ম্যাক যে কোন একটি অপারেটিং সিস্টেম চালিত কম্পিউটার/ল্যাপটপ, ম্যাক থাকলে iOS এ্যাপ বিল্ড দিতে পারবেন। এন্ড্রয়েড মোবাইল থাকলে ভালো সাথে iPhone থাকলে আরো ভালো iOS এ্যাপ টেস্ট করতে পারবেন।

ডেভলপমেন্ট করার সফটওয়্যার: Android Studio / IntelliJ IDEA / Visual Studio Code যে কোন একটা।

চাকুরি: দেশে-বিদেশে এই প্লাটফর্মের ডেভলপারদের বেশ ভালো চাহিদা রয়েছে। তবে ডেভলপারের সংখ্যা বেশি থাকায় তুলনামূলক স্যালারি ন্যাটিভ ডেভলপারদের তুলনায় কম হতে পারে, অনেকে শিখছে বলে চাকুরির বাজারে প্রতিযোগীতা বেশি কিন্তু জবের পরিমানও বেশি।

যদি এই প্লাটফর্ম পছন্দ করেন তবে আপনার নামের নিচে যে “Mobile App Developer” লিখেছিলেন সেটার সাথে ফ্লাটার যুক্ত করে লিখুন “Mobile App Developer – Flutter”।

React Native –

এটি নামে ন্যাটিভ কিন্তু কাজে নয়। ফ্লাটার আসার আগে এটিই ক্রস-প্লাটফর্মের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল। ফ্লাটার আসার পর এটির জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ে গেছে। তবে পুরাতন প্রজেক্টগুলো ম্যানেজ করার জন্য এই প্লাটফর্মের ডেভলপার হায়ার করা হয়। আপনার যদি জাভাস্ক্রিপ্ট জানা থাকে তবেই এটা শিখতে পারেন, নতুন করে জাভাস্ক্রিপ্ট শিখে রিয়েক্ট ন্যাটিভ শিখতে নিরুৎসাহিত করবো কারন এটার জব তেমন একটা পাবেন না বিশেষ করে জুনিয়র হিসেবে। তাই এটি নিয়ে আর কিছু লিখলাম না।

বাকি যে ক্রস-প্লাটফর্মগুলো রয়েছে তাদের মধ্যে ডট নেট জানা থাকলে জামারিন শিখতে পারেন যদি ডট নেটে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকে, বিগিনারদের জন্য একদমই শেখা উচিত না।

আয়োনিক, ফোন গ্যাপ এগুলো হলো ইতিহাস, একসময় ছিলো এখন নেই। এজন্যই বলি ক্রস-প্লাটফর্ম আসবে যাবে কিন্তু ন্যাটিভ রয়ে যাবে।

এখন সিদ্ধান্ত নিন কি শিখবেন আর আপনার জব টাইটেল কি হবে।

এরপর হলো কি কি টপিক শিখবেন… 

(পার্ট ২ – এন্ড্রয়েড টপিকস)

(পার্ট ৩ – আইওএস টপিকস)

(পার্ট ৪ – ফ্লাটার টপিকস)

(পার্ট ৫ – রিজিওমি/সিভি তৈরি ও জবে এ্যাপ্লাই করা)

(2) Comments

  • Mahim ahmed raj 22/03/2024 @ 6:33 PM

    Vaiya ami app Developer sikte cai… Heking sikye cai nijer web saet banate cai nije baniye sobaike diye kaj korate cai fising Heck sikte cai

Comments are closed.

X