এ্যান্ড্রয়েড এ্যাপ রিজেক্ট/সাসপেন্ড ও কনসোল এ্যাকাউন্ট টার্মিনেট থেকে বাঁচার উপায়

app-reject-account-termination-prevent

কিছু নিয়ম মানলে আমরা সহজেই এ্যাপ রিজেক্ট/সাসপেন্ড ও কনসোল এ্যাকাউন্ট টারমিনেট হওয়া থেকে বাঁচতে পারি। নিয়মগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।

১. গুগলকে ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করা যাবে না। গুগল যা বলে তা মানতে হবে।

২. ইউজারের ডেটা (লগিন/ব্যাকগ্রাউন্ডে ডেটা কালেক্ট) নিজের সার্ভারে নিয়ে আসতে হলে https ব্যবহার করুন, ডেটা যে কালেক্ট করছেন সেটা ইউজারকে জানানোর জন্য- প্রাইভেসি পলিসিতে লিখে দিন, প্লে কনসোলের App content অপশনে ডিক্লেয়ার করে রাখুন যে আপনি কেন কোন ডেটা কালেক্ট করছেন।

৩. প্লে কনসোলে একই রকম অনেক এ্যাপ আপলোড করা যাবে না এটা স্পেমিং ধরে নিবে গুগল।

৪. ইউটিউবের ভিডিও ব্যবহার করলে সেটা আপনার চ্যানেলের হতে হবে। অন্যের চ্যানেলের ভিডিও ব্যবহার করলে সেই চ্যানেলের সাথে ডকুমেন্টেড চুক্তি করা থাকতে হবে যে আপনি সেই চ্যানেলের ভিডিও ব্যবহার করার জন্য অনুমতি নিয়েছেন, গুগল ফর্মের মাধ্যমে স্ক্যান কপি চাইতে পারে। শুধু ইউটিউবের ভিডিও দিয়ে এ্যাপ বানানো হলে গুগল অনেক ঝামেলা করে এমনকি আপনার লিগ্যাল ডকুমেন্ট থাকলেও। ইউটিউবের ভিডিও ডাউনলোড করে নিজের সার্ভারে রেখে এ্যাপে দেখালেও ঝামেলা করে অনেক সময়। তাই ভিডিও নিজের সার্ভারে রেখে এবং বেশ কিছু ভিডিও সম্পূর্ণ ইউনিক যা ইউটিউবে নেই এমন হওয়া উচিত। অর্থাৎ কিছু ভিডিও ইউটিউবের কিছু ইউটিউবে নেই এমন হলে গুগল সমস্যা করবেনা বলে আশা করা যায়।

৫. ইউটিউব ভিডিওর পেইজে এডমোব ব্যবহার করতে পারবেন না।

৬. গুগলের নিয়ম অনুসারে একজনের একটাই কনসোল এ্যাকাউন্ট থাকবে। একাধিক এ্যাকাউন্ট একজন ওপেন করলে সবগুলো টারমিনেট হয়ে যাবে।

৭. এ্যাকাউন্ট টার্মিনেট হলে, আপনি আপনার নামে আবার এ্যাকাউন্ট না খুলে অন্যের নাম/ঠিকানা ব্যবহার করে নতুন জিমেইল দিয়ে এ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন।

৮. সোর্স কোড কিনে কিংবা গিটহাব থেকে ডাউনলোড করে ব্যবহার করলে দেখে নিবেন ইউজারের জন্য ক্ষতিকর কোন কিছু যুক্ত করা আছে কি না যা ব্যাকগ্রাউন্ডে কিছু করার চেষ্টা করে কিন্তু আসল সার্ভিসের সাথে রিলেটেড নয় যেমন: বইয়ের এ্যাপে মেসেজ/কলের পারমিশন যুক্ত থাকা কিংবা স্টোরেজে পার্মিশন/কোড যুক্ত থাকা যা অপ্রাসঙ্গিক। এগুলো রিমুভ করে দিতে হবে। এমনি করে, কোন লাইব্রেরি যা ইউজারের ডেটা অন্য কোন তৃতীয় পক্ষকে পাঠায় এমন কিছু যুক্ত আছে কি না তা দেখতে হবে। এন্ড্রয়েড স্টুডিওর Network Inspector এর মাধ্যমে সহজেই দেখতে পারবেন ডেটা অন্য কোন সার্ভারে পাঠানো হচ্ছে কিনা।

৯. ক্র্যাসলিটিকস শুরু থেকেই এ্যাপে দিবেন এতে অনেক ক্র্যাস শুরুতেই ধরতে পারবেন এবং সমাধান করতে পারবেন। কোন এ্যাপ বার বার বা অনেক বেশি পরিমান ক্র্যাস করলে গুগল সেটাকে রিমুভ করে দিতে পারে।

১০. শুধু ওয়েব ভিউ এ্যাপ হলে তার সাথে ন্যাটিভ আরো পেইজ যুক্ত করুন। শুধু ওয়েবভিউ কিংবা খুব কম ফিচার যুক্ত সাদামাটা এ্যাপ আপলোড করলে এ্যাপ এ্যাপ্রোভ নাও হতে পারে কিংবা পরে রিমুভ করে দিতে পারে।

১১. ক্লিক করলে লিংকে নিয়ে যাবে/লিংক ওপেন হবে এমন বাটন থাকলে লিংক যেন কাজ করে। লিংকে ক্লিক করলে ইরর পেইজ দেখায় এমন যেন না হয়। কোন বাটন/মেনু/পেইজের কাজ নাই ভবিষ্যতে কোন কাজ/তথ্য যুক্ত করবেন এমন হলে বাটন/মেনু/পেইজটি হাইড করে রাখুন রিলিজের সময়। অপ্রয়োজনীয় বাটন, মেনু, পেইজ যুক্ত করবেন না যার কোন ফাংশনালিটি নাই।

১২. অপ্রয়োজনীয়ভাবে মেনিফেস্টে পারমিশন যুক্ত করবেন না। যেটা দরকার সেটাই যুক্ত করুন।

১৩. অনেক পুরাতন লাইব্রেরি ব্যবহারে সাবধান হবেন। ব্যবহারের পর ভালো করে টেস্ট করবেন যেনো ক্র্যাস না করে।

১৪. R8 / ProGuard ব্যবহার করুন রিলিজ বিল্ড করার সময়।

১৫. প্লে-কনসোল কিনে ফেলে রাখবেন না। কোন একটি এ্যাপ আপলোড করুন কেনার কিছুদিনের মধ্যে। হয়তো পাবলিক রিলিজ করতে সময় লাগবে কিন্তু টেস্টিংয়ের জন্য হলেও আপলোড করে রাখবেন।

১৬. এ্যাপে অন্যের কন্টেট ব্যবহার করবেন না। যেমন: অডিও, ভিডিও, ছবি/লগো/ব্যাকগ্রাউন্ড, লেখা, বই ইত্যাদি যদি কপিরাইট ফ্রি না হয় তবে আপনার এ্যাপে ব্যবহার করবেন না। অন্য এ্যাপে যদি আপনার আগে হুবহু কন্টেন্ট ব্যবহার হয় গুগল আপনার এ্যাপ রিমুভ করে দিবে। কপিরাইট খুবই মারাত্বক অপরাধ হিসেবে গন্য করে গুগল।

১৭. নিজের ডেভলপার কনসোল এ্যাকাউন্ট বিক্রয় করবেন না, অনেক টাকা পেলেও না, এটা গুগলের নিয়ম পরিপন্থি। কারন পরে আর নিজের নামে/ঠিকানায় কনসোল কিনতে পারবেন না। গুগল একের বেশি কনসোল খুলতে দেয় না।

১৮. বিকাশ, নগদ, ফুডপান্ডা, উবার, পাঠাও এই ধরনের এ্যাপ মার্কেটে চালানোর স্বপ্ন দেখলে আপনাকে মনে রাখতে হবে: সরকারি অনুমতি নেয়া, ৬-৭ জন বা তার বেশি ইঞ্জিনিয়ার নিয়মিত বেতন দিয়ে রাখা, মার্কেটিংয়ের জন্য বড় একটি টীম রাখা সহ অন্যান্য কাজের জন্য শতকোটি টাকা বাজেট প্রয়োজন। তবে এ্যাপ তৈরি করে বিক্রয় করতে পারেন।

১৯. লাইভ টিভি, লাইভ ভিডিও খেলা/স্পোর্টস এগুলোর জন্য অবশ্যই কর্তৃপক্ষের অনুমতি/লাইসেন্স প্রয়োজন হবে নয়তো গুগল আপনার এ্যাপ রিমুভ করে দিবে।

২০. আবার বলি, গুগলকে ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করে বিপদ ডেকে আনবেন না। এ্যাপের ফাংশনালিটি, স্ক্রীনশট, ডেসক্রিপশন একটার সাথে আরেকটার মিল থাকতে হবে, গুঁজামিল দিবেন না। এ্যাপ আপডেট করার পর নতুন এ্যাপ বানিয়ে ফেলবেন না। যেমন: আগে নিউজের এ্যাপ ছিলো পরে একই এ্যাপ আপডেট করে গেম বানিয়ে ফেলেছেন- এমন কাজ করবেন না। আগের এ্যাপ প্রয়োজন না থাকলে সেটা আনপাবলিশ করে নতুন এ্যাপ নতুন করে আপলোড করুন। ডাউনলোডের পরিমান, রেটিং নতুন করেই হবে নতুন এ্যাপে।

২১. আপনি নিজে অন্যের এ্যাকাউন্টে এ্যাপ আপলোড করার জন্য আপনার জিমেইল দিয়ে সেই এ্যাকাউন্টের এক্সেস নিবেন সরাসরি মূল এ্যাকাউন্ট আপনার প্রয়োজন নেই।

২২. নিয়মিত জিমেইল চেক করুন। এ্যাকাউন্টের কোন সমস্যা হলে গুগল সময় দিবে সমাধান করার জন্য।

আরো তথ্য সংযোজনের প্রয়োজন হলে বা কোন তথ্য মিসলিডিং মনে হলে কমেন্টে/মেসেজে জানান, আপডেট করে দিবো, সকলেই উপকৃত হবে। -ধন্যবাদ

X